প্রথম পাতা
উপদেষ্টা আসিফের দু’টি অস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু হয় কুমিল্লা থেকে
স্টাফ রিপোর্টার
২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দু’টি অস্ত্রের লাইসেন্স‘ নিয়েছেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার নামে এই দু’টি অস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। পিস্তলের লাইসেন্স নং-১২৫৪। এটি গত বছরের ১৫ই ডিসেম্বর ইস্যু হয়েছে। আর শটগানের লাইসেন্স নং-১৬৯১। এটিও গত বছরের ৩রা ডিসেম্বর ইস্যু করা হয়। অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য যে ক’টি যোগ্যতা দরকার সেগুলো আসিফের না থাকলেও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও উপদেষ্টা ক্যাটাগরিতে তিনি লাইসেন্স পেয়েছেন।
অস্ত্র আইনে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বয়স ৩০ থেকে ৭০ বছর থাকতে হবে। কিন্তু আসিফ মাহমুদের বয়স ২৫ বছর ১১ মাস ১৮ দিন। এছাড়া পিস্তল, রিভলবার ও রাইফেলের ক্ষেত্রে আবেদনের আগের তিন অর্থ বছর ধারাবাহিকভাবে তিন লাখ টাকা আয় কর দিতে হয়। আর শটগানের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকা আয় কর দিতে হয়। এছাড়া অস্ত্র আইনে বলা হয়েছে, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সমমর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধে বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তাদের ক্ষেত্রে বয়সের বাধ্যবাধকতাও থাকবে না।
রোববার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ মারাক্কেশ ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল-২০২৫ অনুষ্ঠানে যোগদান করতে তার্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকে-৭১৩ নম্বর ফ্লাইটে ঢাকা থেকে তুরস্ক হয়ে মরক্কোতে যাচ্ছিলেন। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রি-বোর্ডিং স্ক্রিনিং করার সময় তার সঙ্গে থাকা পাউচের (ছোট ব্যাগ) মধ্যে অ্যামোনেশন ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। শনাক্তের পর ব্যাগ থেকে ম্যাগাজিনটি বের করে তিনি তার প্রোটোকল অফিসারের কাছে জমা দেন এবং নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন (আইকাও), বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অ্যারোনটিক্যাল পাবলিকেশন ইনফরমেশন (এআইপি), হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইএটিএ) ডেঞ্জারাস গুড রেগুলেশনের মধ্যে কেবিন ব্যাগেজে ম্যাগাজিন বহন নিষিদ্ধ। তবে লক্ড প্যাকেজে ও প্যাকিং নীতি মেনে আগে ঘোষণা দিয়ে চেক-ইন লাগেজে গুলি ও ম্যাগাজিন নেয়া যায়।
আসিফ মাহমুদের ওই ঘটনা জানাজানির পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। সমালোচনার কারণে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের অস্ত্রের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা আসিফ।
এদিকে, আসিফ মাহমুদকে নিয়ে এসব আলোচনার মধ্যেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিভিআইপি, ভিআইপিদের লাগেজ স্ত্রিনিংয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছেন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দর সূত্র বলছে, যাত্রীদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ছয়টি অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, ভিআইপি ও ভিভিআইপি যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে এখন থেকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এভিয়েশন সিকিউরিটি সদস্যদের নিয়মিত সচেতনতামূলক ব্রিফিং ও নির্দেশনা প্রদান। সিসিটিভি মনিটরিং টিমকে বিশেষ নজরদারির নির্দেশনা প্রদান। মেটাল ডিটেক্টর ও এক্স-রে মেশিনে স্ক্যানের পর ‘হাই রিস্ক’ ব্যাগের ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল তল্লাশি বাধ্যতামূলক। আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারীদের জন্য বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে পূর্বানুমতি নিশ্চিতকরণ এবং রেকর্ড সংরক্ষণ। কোনো ধরনের ‘সিকিউরিটি ব্রিচ’ ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিরোধমূলক নির্দেশনা প্রদান।
পাঠকের মতামত
একজন উপদেষ্টা তথা মন্ত্রীর বৈধ অস্র থাকা স্বাভাবিক । বয়স ও আয়কর প্রদানের যে শর্ত তা কোন মন্ত্রী সমপর্যায়ের ব্যাক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বিতর্ক করে অযথা সময় নষ্ট না করাই ভাল।
লাইসেন্সধারী ব্যক্তি বিদেশে গেলে অস্ত্র আইনে তার অস্ত্র কি তার বাসায় বা প্রটোকল অফিসারের কাছে রেখে যেতে পারেন, নাকি স্থানীয় থানায় জমা দিয়ে যেতে হয়?