বাংলারজমিন
ব্রহ্মপুত্রে স্থায়ী সেতুর দাবি দেওয়ানগঞ্জবাসীর
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত ভাসমান সেতু দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহর ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামবাসীর পারাপারের একমাত্র মাধ্যম। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। উপজেলা শহর ঘেঁষা ভাসমান সেতুটি বছরের বেশিরভাগ সময় থাকে ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাতে চরম দুর্ভোগ এলাকাবাসী ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঘুরতে আসা লোকজনের। ওই ভাসমান সেতুর বদলে সেখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানান উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার আওতাধীন চরকালিকাপুর, মাইছেনিরচর ও বানিয়ানিরচর গ্রামবাসী যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবদিক থেকে পিছিয়ে ছিলো। পৌর শহরের সঙ্গে গ্রামগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর কাঠ ও ড্রাম দিয়ে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করে। যার দৈর্ঘ্য ১৪৫ মিটার ও প্রস্থ ১.৫২ মিটার। চাপ বেশি হওয়ায় সেতুটি নির্মাণের বছরই ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এরপর কোনোমতে, মানুষ চলাচলের উপযোগী করে সংস্কার করা হয়। এভাবে প্রতিবছর দফায় দফায় চলতে থাকে ভাঙন ও পরবর্তীতে সংস্কার। এরপর ২০২৩ সালে সংস্কারের সময় স্টিলের পাটাতন ও রেলিং বসানো হয়। কয়েক মাস পর সেটাতেও দেখা যায় ভাঙন। সম্প্রতি ভাঙনের পর দীর্ঘদিন চলাচল বন্ধ থাকে ওই সেতু দিয়ে। পরবর্তীতে পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা এসিল্যান্ড শামসুজ্জামান আসিফের তত্ত্বাবধানে সেতুটি সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার খরচ মাত্র ৫ হাজার টাকা! ভাসমান সেতু সংস্কারে পৌরসভায় কোন আলাদা ফান্ড নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এভাবে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র ভাসমান সেতু কতোদিন চলবে এমন নাজেহাল অবস্থায় সেই প্রশ্ন সকলের। ভাসমান সেতু এলাকা সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, পূর্ব-পশ্চিমমুখী সেতুটির দু’পাড়ের কোনো এক পাড়ের সংযোগ ঠিক নেই। সেতুতে উঠতে পূর্ব পাড়ে ৩০ মিটার নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয় এবং পশ্চিম পাড়ে কখনো লাফিয়ে নামতে হয় আবার কখনো হাঁটুপানি ডিঙাতে হয়। সেতুর মাঝামাঝিতে রেলিং ও পাটাতন ভাঙা অংশে বাঁশ দিয়ে জোড়া লাগানো আছে। ওইখানে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। সেতুটিকে ঘিরে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। নদের পূর্ব পাড়ে রয়েছে চমৎকার সরু রাস্তা, শ্যামল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও রেস্টুরেন্ট। পশ্চিম তীরেই থানা সংলগ্ন দৃষ্টিনন্দন রাস্তা ও বসার ব্যবস্থা রয়েছে। সবমিলিয়ে ব্রহ্মপুত্রের ওই সেতু এলাকা অনেকটাই পর্যটন স্পট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ভাসমান সেতুটির বেহাল দশার বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে কচুরিপানার চাপে প্রতি বছর তিন-চার বার সেতুটি ভেঙে যায়। কচুরিপানা না সরিয়ে সেতুটি সংস্কার করলে আবারো ভেঙে যাবে। তবে ওইখানে ভাসমান সেতুর বদলে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা জরুরি।