বাংলারজমিন
জামালগঞ্জের রাস্তাগুলো এখন মরণফাঁদ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
তোফাজ্জল ইসলাম, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে
৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ জামালগঞ্জ-রূপাবালী, জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জ এবং জামালগঞ্জ থেকে নোয়াগাঁও বাজার হয়ে মান্নানঘাট পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে যানবাহন ও পথচারীদের জন্য এক ভয়াবহ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ। বর্ষা মৌসুমে এই গর্তে পানি জমে রাস্তা নদীতে রূপ নেয়। এমন অবস্থায় যান চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটেও চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সড়কগুলো জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার মানুষদের সুনামগঞ্জ জেলা সদর এবং সিলেটের সঙ্গে সংযোগের একমাত্র পথ। অথচ গত এক যুগেও এসব সড়কে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। ফলে পণ্য পরিবহন, রোগী, শিক্ষার্থী ও জরুরি সেবার যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে এবং দ্রুত সংস্কারের দাবিতে সোমবার সকাল ১১টায় জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে দুইটি পৃথক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সচেতন নাগরিকবৃন্দ ও শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে একটি এবং জামালগঞ্জ সিএনজি, ইজিবাইক ও মোটর সমিতির আয়োজনে অন্য মানববন্ধনে সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জামালগঞ্জ ইজিবাইক সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন যুবদল নেতা মেহেদী হাসান রুকন ও ছাত্র প্রতিনিধি হাসান আল মাছুম। বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মো. আব্দুর রব, জামালগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বিন বারী, বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুলফিকার চৌধুরী রানা, জামালগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোটরবাইক মালিক সমিতির সভাপতি রিপন মিয়া, সিএনজি-লেগুনা সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সরকার, ইজিবাইক সমিতির সম্পাদক গোলাম রব্বানী, ছাত্র প্রতিনিধি তোফায়েল আহমদ, হারুনুর রশিদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ২০২২ সালের আকস্মিক বন্যায় রাস্তার ভয়াবহ ক্ষতি হয়। এরপর থেকে মাঝে মাঝে সামান্য মেরামত হলেও রাস্তা চলাচলের অযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। গর্ভবতী নারী ও মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন দুর্ঘটনায়। মানববন্ধন শেষে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সরকারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর বলেন, রাস্তার দুরবস্থার কারণে আমরা নিজেরাও ভোগান্তিতে আছি। স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, এই রাস্তাগুলোর ব্যাপারে জেলা চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০ কোটি ও ৬০ কোটি টাকার দু’টি প্রকল্পের প্রাক্কলন প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হবে।